ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, এই মুহূর্তে শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের যেকোনো ব্যক্তি, পরিবার, প্রতিষ্ঠান কিংবা দেশের জন্য সাইবার হামলা মোকাবেলা করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে।
সোমবার সংসদে জাতীয় পার্টির সদস্য নূরুল ইসলাম মিলনের কার্যপ্রণালী বিধির ৭১ বিধি অনুসারে জরুরি জনগুরুত্বপুর্ণ নোটিশের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বেশকিছু সাইবার হামলার শিকার হয়েছি। শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্বের অনেক উন্নত আধুনিক এবং যারা এই সাইবার জগতে নেতৃত্ব দেয় সেইসব দেশগুলোও মারাত্বকভাবে সাইবার হামলার শিকার হয়েছে।’
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, এই মুহূর্তে কোন ব্যক্তি, পরিবার বা প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে হলে আর সশস্ত্র হামলা চালানোর প্রয়োজন নেই। সাইবার হামলা চালিয়েই যে কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা দেশের ক্ষতি করা সম্ভব। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছি।
তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিশন যখন প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন তারপর থেকেই বাংলাদেশে ডিজিটাইজেশনের কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর আস্তে আস্তে যতবেশি ডিজিটাইজেশন হয়, ততবেশি সাইবার ঝুঁকিতেও আমাদের পড়তে হয়। ইতোমধ্যে ২০১৪ সালের ১১ মার্চ আমরা সাইবার ঝুঁকি নিরসনে সাইবার সিকিউরিটি স্ট্যাটেজি প্রণয়ন করেছি। একই বছরের ২৪ মার্চ প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তথ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তথ্য নিরাপত্তা পলিসি গাইডলাইন করা হয়েছে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৫ সালের আগস্টে জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ নীতিমালা-২০১৫ প্রণয়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের তথ্য নিরাপত্তা বিষয়ক একটি ম্যানুয়েল গভর্মেন্ট অব বাংলাদেশ ইনফরমেশন সিকিউরিটি ম্যানুয়াল প্রস্তুত করা হয়েছে। যেখানে প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তির কার কি করণীয় আছে সে সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেয়া এবং বর্ণনা করা হয়েছে।’
সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ইতোমধ্যে ১ হাজার ৯৬ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এর বাইরেও বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘটনা ঘটার পর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাক্রমে প্রায় ১০টি বৈঠক করা হয়েছে। এ বৈঠকগুলোতে বর্তমানে কোন ধরনের আইন, পলিসি, গাইডলাইন দরকার সেগুলো আইডেন্টিফাই করা হয়েছে। সেগুলো প্রণয়নের কাজে আমরা হাত দিয়েছি। এবং সাইবার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম গঠন, সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সি গঠন, সাইবার সিকিউরিটি কাউন্সিল গঠন এবং ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব গঠনের প্রকল্প ইতোমধ্যেই গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পাশাপাশি বাংলাদেশের ২২টি জাতীয় গুরুত্বপুর্ণ প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ সাইবার ইন্সিডেন্ট রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে। সাইবার সিকিউরিটি ইস্যু শুধুমাত্র জাতীয় ইস্যু নয়, এটি একটি ক্রস বর্ডার ইস্যু। বিভিন্ন ধরণের সাইবার ইন্সিডেন্ট রেসপন্স টিমের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে যে সাইবার হামলা হচ্ছে তার অধিকাংশ দেশের বাইরে থেকে আসছে। তাই আমাদের জাতীয় পর্যায়ে সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম চালানোর জন্য ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। ইমেইল সার্ভিস ফর গভর্মেন্ট প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারের ইমেইল এবং তথ্য আদান-প্রদান নিশ্চিত করার জন্য ডেটা সেন্টার নিশ্চিত করা হয়েছে। পাশাপাশি ক্রস বর্ডার কলাবরেশনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক যেসব সাইবার ক্রিমিনাল আছে তাদের যে আক্রমণ সেগুলোকে প্রতিহত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
Comments
Post a Comment