যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে বেশি আসন পাওয়ার পরও দুশ্চিন্তা কাটছে না টেরিজা মের।পরিকল্পনামাফিক এগোতে গিয়ে প্রথম থেকেই ধাক্কা খেতে হচ্ছে তার দল কনজারভেটিভ পার্টিকে।
পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে আয়ারল্যান্ডের ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টির (ডিইউপি) সঙ্গে জোট বেধে সরকার গড়ার পরিকল্পনা করলেও এই জোট কতটা সফল হবে, তা নিয়ে এখন অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে টেরিজার দল কনজারভেটিভ পার্টির মধ্যে।
রাজনীতিকদের একাংশ বলছে, ব্রেক্সিট থেকে সমকামী আইনে মতের পার্থক্যে দ্বন্দ্ব বাধতে পারে অনেক জায়গাতেই। তবে হাত গুটিয়ে বসে নেই জেরেমি করবিনও। হাউস অব কমন্সে আসন বাড়িয়ে লেবার নেতার আত্মবিশ্বাস এখন তুঙ্গে। সাধারণ নির্বাচনে দলের দুরন্ত ফলাফলের পরেই জানিয়েছেন, দেশকে নেতৃত্ব দিতে তিনি প্রস্তুত। পার্লামেন্টের অন্য দলগুলিকেও সরকার গঠনে বিরোধিতার পথে হাটার ডাক দিয়েছেন তিনি। রোববারে একটি সাক্ষাৎকারে করবিন বলেছেন, ‘এই বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে আবারো দেশে নির্বাচন হতে পারে। এই রকম চরম অস্থিরতার মধ্য দিয়ে আমরা বেশি দিন চলতে পারব না।’
এ দিকে, ১০ ডাউনিং স্ট্রিট ও ডিইউপি রোববার জানিয়েছে, সরকার গঠনের জন্য দু’দলের মধ্যে প্রয়োজনীয় শর্ত নিয়ে শীঘ্রই আলোচনা শুরু হবে। প্রাথমিক ভাবে কিছু শর্তে ইতোমধ্যেই সহমত হয়েছেন দু’দলের নেতারা। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়া বা ব্রেক্সিট নিয়ে মের প্রস্তাবিত শর্তাবলির তুলনায় অনেক নমনীয় পথে হাটতে চায় ডিইউপি।
অন্যদিকে, সমকামিতা বা গর্ভপাতের মতো সামাজিক বিষয় নিয়েও গোড়ামি রয়েছে এই দলের। পার্লামেন্টে বাজেট বা কোনও বিষয় নিয়ে আইন পাশ করার জন্য ডিইউপির ১০ জন এমপির সমর্থন লাগবে মের। হাউস অব কমন্সের এই নতুন অঙ্কের করণেই জটিল হতে পারে ব্রেক্সিট আলোচনা। কারণ, ইইউ থেকে বেরিয়ে যেতে চাইলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে একই কাতারে অন্তর্ভুক্ত থাকতে চায় ডিইউপি। যার ফলে আগের মতোই আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে বাণিজ্যে কোনও বাধা নিষেধ থাকবে না যৃক্তরাজ্যের। অন্য দিকে, সমকামী আইন নিয়ে ডিইউপির কড়া অবস্থানে উদ্বিগ্ন কনজারভেটিভদের একাংশ। স্কটল্যান্ডের এক সমকামী নেতা বলেছেন, ‘ডিইউপির সঙ্গে যদি চুক্তি হয়, তবে তাতে এলজিবিটিদের অধিকারে কোনও বাধা নিষেধ থাকা চলবে না। তার কথায়, ‘আমি এই বিষয়ে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর থেকে আশ্বাস চাই।’
১৯ জুন যুক্তরাহজ্যর নতুন পার্লামেন্ট শুরুর কথা ঘোষণা করবেন রানি। ওই বক্তৃতাতেই নতুন বাজেট ও সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের কথাও জানাবেন তিনি। করবিন বলেছেন, ‘রানির সেই বক্তৃতায় উল্লিখিত সরকারি নীতির বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য সংশোধনী আনতে চাই আমরা।’ ব্রেক্সিট পরবর্তী ব্রিটেনে চাকরির সুযোগ বাড়ানো, সামাজিক খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি মকুব, উচ্চবিত্ত ও কপোর্রেট সংস্থাগুলির উপর বেশি কর বসানো নিয়েও চাপ দেবে লেবার। করবিন জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইনকে ব্রিটিশ আইনে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করবেন তিনি। ইউরোপীয় বাজারের সঙ্গে শুল্কবিহীন বাণিজ্যের পথ যাতে খোলা থাকে তা নিয়ে প্রস্তাব দিবে লেবার।খবর: বিবিসি
Comments
Post a Comment