নদীর পানি বণ্টন নিয়ে বাংলাদেশের ন্যায্য দাবিকে ভারত কখনোই অস্বীকার করতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায়।
মঙ্গলবার আসামের গৌহাটিতে ‘অষ্টমতম ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ ডায়লগ’-এর সমাপনী দিনে তিনি এসব কথা বলেন।
তথাগত রায় বলেন, বাংলাদেশের মধ্যে প্রবাহিত নদীর পানির ভাগ নিয়ে সেদেশের দাবিকে কোনোমতেই অস্বীকার করতে পারে না ভারত। এটা আমার ব্যক্তিগত অভিমত। তবে ভারতের সরকারি অভিমত নয়।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী যেকোনো নদীর ভাটিতে যে রাষ্ট্র থাকে (লোয়ার রিভারাইন স্টেট) সেই সব রাষ্ট্রের পানির প্রতি স্বাভাবিক অধিকার থাকে। ঠিক সেভাবেই বাংলাদেশেরও পানির ভাগ পাওয়া উচিত।
তিনি আরো বলেন, এটা শুধু তিস্তার পানিই নয়, অনেক নদীই আছে, যেগুলি ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবাহিত হয়েছে। এই দুই দেশের মধ্যে পানির বণ্টন নিয়ে একটি ব্যাপক আকারে পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। আমরা বলতে পারি না যে, বাংলাদেশ পানির ভাগ পাবে না। দুই দেশেই পানির কিছু ঘাটতি আছে। কিন্তু সেই ঘাটতি থেকেই পানি বণ্টন করতে হবে।
আরবিট্রেশন, যৌথ কমিশন বা এ ধরনের অন্য প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়েই দুই দেশের মধ্যে পানি সমস্যার সমাধান করা উচিত বলেও মনে করেন ত্রিপুরার রাজ্যপাল। এ সময় তিনি চীনের অংশে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর চীন সরকারের পক্ষ থেকে বাঁধ দেওয়ারও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
নদীর ওপর বাঁধ দিলে বাংলাদেশই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করেন তথাগত রায়। এবিষয়ে তিনি বলেন, ব্রহ্মপুত্রের ওপর ভারত কখনো বাঁধ নির্মাণ করেনি। ফলে, এই নদের পানির গতিপথও পরিবর্তন হয়নি। কিন্তু চীনের পক্ষ থেকে বাঁধ নির্মাণ হলে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ব্রহ্মপুত্রের পানি বাংলাদেশে যমুনা নামে প্রবাহিত হয়েছে। এর ফলে কৃষি কাজেরও ক্ষতি হবে বলে মনে করেন ত্রিপুরার রাজ্যপাল।
দুই দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সময়ে অংশগ্রহণ করেন ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল, রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা, বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক রাম মধাব, দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী প্রমুখ।
গৌহাটিতে যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করে আসমের স্টেট ইনোভেশন অ্যান্ড ট্রান্সফর্মেশন আয়োগ (এসআইটিএ), মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইনস্টিটিউট অব এশিয়ান স্টাডিস এবং বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর রিজিওনাল স্টাডিস (বিএফআরএস) এবং ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন (আইএফ)।
Comments
Post a Comment