বিশ্বসেরা হাফেজ মামুনের শিক্ষার সমস্ত ব্যয়ভার গ্রহণের পর এবার তার মাদ্রাসাকে পরিপূর্ণ ডিজিটাল করে গড়ে তোলার ঘোষণা দিলেন মিসর আওয়ামী লীগ সভাপতি।
হাফেজ আব্দুল্লাহ আল মামুন এ বছর এপ্রিলে মিসরের কায়রোতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে। গত ২২ জুন মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল সি সি তার হাতে বিশেষ পুরস্কার তুলে দেন।
হাফেজ আব্দুল্লাহ আল মামুন ৭৯/১/জি, উত্তর যাত্রাবাড়ী, ঢাকায় তাহফিজুল কুরআন ওয়াসসুন্নাহ মাদ্রাসার ছাত্র। মাদরাসাটি অতীতে অনেক কৃতি হাফেজ উপহার দিয়েছে। এপ্রিলে প্রথম স্থান ঘোষনার সময় মিসর আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং বিশিষ্ট প্রবাসী ব্যাবসায়ী এজিএম সাইদুল হক সুমন হাফেজ আব্দুল্লাহ আল মামুনের লেখাপড়ার সমস্ত ব্যয়ভার গ্রহণ করেছিলেন। মিসরের প্রেসিডেন্টের পুরস্কার বিতরণের সময় হাফেজ আব্দুল্লাহ আল মামুনের সফরসঙ্গী ছিলেন তার মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আলহাজ হাফেজ ক্বারী নাজমুল হাসান।
মিসরে এসে তিনি এজিএম সাইদুল হক সুমন ও মিসরস্থ আরবি ই এডুকেশন টেকনোলজি প্রোভাইডার ‘আইডিয়া ইনোভেটিভ’ এর ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে বৈঠকে মিলিত হয়। বৈঠকে আগামী ছয় মাসে, তাহফিজুল কুরআন ওয়াসসুন্নাহ মাদ্রাসা পরিপূর্ণভাবে আরবি, বাংলা ও ইংরেজি ভাষা সমৃদ্ধ একটি পরিপূর্ণ আইসিটি বেইজড মডেল মাদ্রাসা হিসেবে তৈরি করা হবে বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
ই-ক্লাস, ই-অ্যাটেন্ডেন্ট, মোবাইল অ্যাপস বেইজড ম্যাটেরিয়াল, ক্লাউড একাউন্টিং, ক্লাউড ইনভেনটরি, জিপিএস ভেহিকেল ট্র্যাকিং, ক্লাউড ফিঙ্গার প্রিন্ট বেইজড সেন্ট্রাল সিস্টেম, কাস্টমাইজড ক্লাউড শেয়ারিংসহ অনেক অত্যাধুনিক ফিচার এই সফটওয়ারে ব্যাবহার করা হবে। তবে বিশেষ আকর্ষণ হচ্ছে অনলাইন লাইব্রেরি। ইংরেজি ও বাংলার পাশাপাশি এখানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের দুষ্প্রাপ্য ও বিভিন্ন ধরনের আরবি কিতাবের বিশাল সংগ্রহ থাকবে। যা মাদ্রাসার ছাত্ররা তাদের একাউন্টে দিয়ে মোবাইল অথবা কম্পিউটারের সাহায্যে লগ-ইন করে পড়তে পারবে। ছাত্রদের সুবিধার্থে মাদ্রাসার কম্পাউন্ডে ক্লাউড বেইজড ইন্ট্রানেট ওয়াই ফাই জোন গড়ে তোলা হবে। উচ্চমানের সিকিউরিটি সিস্টেমের সাহায্যে তথ্য সুরক্ষা ও অপপ্রয়োগ রোধ করা হবে।
আর এ প্রকল্পের পুরো ব্যায়ভার বহন করবে মিসর আওয়ামী লীগ সভাপতি এজিএম সাইদুল হক সুমন।
এ বিষয়ে তাহফিজুল কুরআন ওয়াসসুন্নাহ মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আলহাজ হাফেজ ক্বারি নাজমুল হাসান বলেন, ‘আমাদের মাদ্রাসা একাধিকবার বিশ্বসেরা পুরস্কার পাওয়া প্রতিষ্ঠান। তবে এখনকার ডিজিটাল যুগের সাথে তাল মেলাতে প্রয়োজন ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থা। মিসরে এসে দেখলাম এখানকার উন্নত ফিচার সমৃদ্ধ ডিজিটাল শিক্ষা পদ্ধতি। আমাদেরও ইচ্ছা এমন একটি অত্যাধুনিক ডিজিটাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। কিন্তু সফটওয়ার এবং আনুষাঙ্গিক যন্ত্রপাতি অনেক ব্যয়বহুল যা আমাদের অনুদানবিহীন প্রতিষ্ঠানের একার পক্ষে বহন করা অসম্ভব।
তিনি বলেন, ‘আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সমস্যার সমাধান করে দিয়েছেন সুমন ভাইয়ের মাধ্যমে। তিনি আমাদের হয়ে তার মিসরস্থ কম্পানির মাধ্যমে পুরো ডিজিটাল ব্যবস্থা নির্মাণের সমস্ত ব্যয়ভারের নিশ্চয়তা প্রদান করেছেন। আল্লাহ তায়ালা তাকে তার নিয়তের বরকত দান করুন। ইনশাআল্লাহ আগামী জানুয়ারি থেকে আমরা পরিপূর্ণ ডিজিটাল মাদ্রাসা হিসেবে যাত্রা শুরু করব।’
বাংলাদেশে মিসরস্থ টেকনোলজি ফার্মের হয়ে ইন্সটল ও মেইনটেন্যান্স সেবা দেবে টালি একাউন্টিং সলিউশনের সুপরিচিত গ্লোবাল ডিজিটাল মার্ট। আগামী আগস্ট মাসে গ্লোবাল ডিজিটাল মার্টের ইঞ্জিনিয়াররা প্রশিক্ষণের জন্য মিসর আসবেন। অর্থায়নসহ সার্বিক বিষয়ে মিসর আওয়ামী লীগের সভাপতি এজিএম সাইদুল হক সুমনের কাছে জানতে চাইলে এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিশন ২০২১ ঘোষণা করেছেন। বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্য ব্যবহার আবশ্যিক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও তার সুযোগ্য পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দেশকে ইতোমধ্যেই ডিজিটাল সেবার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে।’
Comments
Post a Comment